Thursday, August 10, 2017

০৬ জানুয়ারি, ১৯৭১


শেখ মুজিবুর রহমান দলীয় অফিসে অনুষ্ঠিত সভায় গণবিরোধী চক্রান্তকারীদের যেকোনো পদক্ষেপের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাসেবকদের সজাগ থাকার আহ্বান জানান। যেকোনো উসকানির মুখে সুশৃঙ্খল থেকে বিগত নির্বাচনের সময়ের মতো ঐতিহ্য বজায় রাখতে বলেন। তিনি জনগণ বিরক্ত হয় এমন কাজ না করতে তাদের উপদেশ দেন। তিনি আরো বলেন, জনগণ আওয়ামী লীগের কর্মসূচির প্রতি যে রায় দিয়েছে বিশ্ব ইতিহাসে তা বিরল। অতএব, দলীয় কর্মীদের সদা সতর্ক থাকতে হবে। আত্মরক্ষার্থে আপনারা লাঠি তৈরি রাখুন, তবে হাই কমান্ডের অনুমতি ছাড়া আপনারা লাঠির ব্যবহার করতে পারবেন না। সহ্যের সব সীমা অতিক্রম হলে সঠিক নির্দেশ দেওয়া হবে। সভায় দলের সহসভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদও বক্তব্য দেন। প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান রাওয়ালপিন্ডিতে বলেন, শিগগির তিনি আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হবেন। ইসলামাবাদ বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, কানাডার প্রধানমন্ত্রী পিয়েরে ট্রুডো ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী অ্যাডওয়ার্ড হিথের পাকিস্তান সফরের পরেই শেখ মুজিবের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। প্রেসিডেন্ট ইতিমধ্যেই পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ভুট্টোর সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। কানাডার প্রধানমন্ত্রী পিয়েরে ট্রুডো চার দিনব্যাপী পাকিস্তান সফরের উদ্দেশে অপরাহ্নে রাওয়ালপিন্ডি এসে পৌঁছান। বিমানবন্দরে প্রেসিডেন্ট জেনারেল আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খান তাঁকে সংবর্ধনা জানান। এরপর প্রেসিডেন্ট পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ আবদুল হামিদ খান, পাকিস্তান বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনীর প্রতিনিধিদের সঙ্গে তাঁকে পরিচয় করিয়ে দেন। বিমানবন্দরে এক বিবৃতিতে কানাডীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া ও পাকিস্তানি অফিসারদের সঙ্গে দ্বিস্বার্থসংশ্লিষ্ট বহু বিষয়ে মতামত বিনিময়ের তিনি আশা রাখেন। তিনি বলেন, পাকিস্তান ও কানাডার মধ্যে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। উভয় দেশই কলম্বো পরিকল্পনা ও কমনওয়েলথভুক্ত রয়েছে। আগামীকাল তিনি ইয়াহিয়ার সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে বৈঠকে মিলিত হবেন। সূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর

Tuesday, July 25, 2017

০৫ জানুয়ারি, ১৯৭১


ঢাকায় সংবাদপত্র সূত্রে প্রকাশ, পূর্ব পাকিস্তান এবং ত্রিপুরার (ভারত) ভূমি রেকর্ড ও জরিপ ডিরেক্টররা গত শনিবার এখানে সমাপ্ত চার দিনের সম্মেলনে প্রদেশের চারটি জেলার সঙ্গে ত্রিপুরার সীমান্ত চিহ্নিতকরণ ও অন্যান্য প্রশ্ন আলোচনা করেন। ত্রিপুরার ভূমি রেকর্ড ও জরিপ ডিরেক্টর এস এ চান্দা ভারতীয় প্রতিনিধিদলের এবং পূর্ব পাকিস্তানের ভূমি রেকর্ড ও জরিপ ডিরেক্টর টি হোসেন পাকিস্তানি দলের নেতৃত্ব দেন। সরকারি সূত্রে বলা হয়, পূর্ব পাকিস্তানের ভূমি রেকর্ড ও জরিপ ডিরেক্টর সম্মেলনে ফেনী নদী বরাবর চট্টগ্রাম/পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং মাতামুহুরী নদী এলাকার নোয়াখালী/কুমিল্লার সঙ্গে ত্রিপুরার সীমানা চিহ্নিতকরণ প্রশ্ন উত্থাপন করেন। ভারতীয় পক্ষ সংশ্লিষ্ট মানচিত্রগুলো পরীক্ষা করে এবং পরীক্ষাকাজ শেষ করার জন্য আরো সময় চায়। আগের বছর সম্পাদিত খণ্ড জরিপসংক্রান্ত ১২টি সিটের প্রাথমিক প্রমাণ সমীক্ষাও বিনিময় করা হয়।
রাওয়ালপিন্ডিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বৈঠকে ১৯৭০-৭১ সালের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি পর্যালোচনা করা হয়েছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান। এনইসির এ বৈঠকে যোগদান করেন পিন্ডিতে উপস্থিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা, প্রাদেশিক গভর্নররা, প্রেসিডেন্টের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস জি এম এম পীরজাদা, অর্থনৈতিক উপদেষ্টা এম এম আহমদ ও পরিকল্পনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান এম এইচ সুফি। আলোচনা প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলে। সূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর

৪ জানুয়ারী ১৯৭১


পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের ২৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রমনা গ্রিনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণদানকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেন, ' পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ এবারের নির্বাচনে এক বাস্তব কর্মসূচির প্রতি রায় দিয়েছে।'
তিনি বলেন, 'সাত কোটি বাঙালি ব্যতীত অন্য কারো ৬ দফা কর্মসূচি পারিবর্তনের অধিকার নেই। নির্বাচনে এ কথা প্রমাণিত হয়েছে যে বাঙালিরা চিরদিনই বাঙালি হিসেবে বেঁচে থাকবে। অতীতেও বাঙালিরা যেকোনো পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছে, এখনো তারা বাঙালি হিসেবেই পরিস্থিতির মোকাবিলা করছে।' বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জনগণকে তাদের অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত আরো আত্মত্যাগের জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান। বঙ্গবন্ধু দেশের ভাবী শাসনতন্ত্র প্রণয়ন সম্পর্কে বলেন, তাঁর দল একাই শাসনতন্ত্র প্রণয়নে সক্ষম হওয়া সত্ত্বেও পশ্চিম পাকিস্তানের নির্বাচিত সদস্যদের এ ব্যাপারে সাদর আমন্ত্রণ জানাবে। অবশ্য তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, যেকানো অবস্থাতেই তিনি নীতির প্রশ্নে আপস করবেন না। বঙ্গবন্ধু আরো বলেন যে একই স্বার্থবাদী মহল কর্তৃক পশ্চিম পাকিস্তানের দরিদ্র জনসাধারণ সমভাবে শোষিত হয়েছে, সে শোষিত জনগণের স্বার্থেও তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। সূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর

Thursday, July 20, 2017

৩ জানুয়ারী ১৯৭১ বাংলাদেশ


ঢাকার রমনা রেসকোর্স ময়দানে আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক আড়ম্বরপূর্ণ সমাবেশে জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদে নবনির্বাচিত আওয়ামী লীগদলীয় ৪১৯ জন সদস্য শপথ গ্রহণ করেন। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং সমাবেশে তাঁর নীতিনির্ধারণী বক্তব্য প্রদান করেন। আওয়ামী লীগপ্রধান শেখ মুজিবুর রহমান রমনা রেসকোর্স ময়দানের বিশাল জনসভায় বক্তৃতাকালে সাবধান করে বলেন, ষড়যন্ত্র এখনো চলছে। জনতাকে উদ্দেশ করে বঙ্গবন্ধু বলেন, 'আপনারা চরম ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত থাকবেন।' তিনি ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে ঘোষণা করেন, 'ছয় দফার শাসনতন্ত্র প্রণীত হবেই, কেউ এটা ঠেকাতে পারবে না। তিনি উত্তরবঙ্গবাসীকে উদ্দেশ করে বলেন, যমুনার ওপর নিশ্চয় সেতু হবে, টাকার অভাব হবে না। শীতলক্ষ্যা ও মেঘনার ওপরও সেতু নির্মাণের প্রচেষ্টা চালানো হবে, তবে আস্তে আস্তে।
সূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।

২ জানুয়ারী ১৯৭১ বাংলাদেশ


ভুট্টোর দূত গোলাম মোস্তফা খার ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মধ্যে আজ অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, আগামী ১৭ জানুয়ারির পর আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবুর রহমান ও পিপলস পার্টি প্রধান জেড এ ভুট্টো শাসনতান্ত্রিক প্রশ্ন আলোচনার জন্য ঢাকায় বৈঠকে মিলিত হবেন। গোলাম মোস্তফা খার বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে তাঁর সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ অবস্থান করেন এবং তাঁরা উভয়েই শাসনতন্ত্র রচনা সম্পর্কে দুই দলের সহযোগিতার ব্যাপারে আলোচনা করেন। জনাব খার আজ লাহোরের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন। ঘূর্ণিদুর্গত এলাকায় সাহায্য কাজের অগ্রগতি বিবেচনার জন্য পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নরের সভাপতিত্বে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়। পূর্ব পাকিস্তানের চিফ সেক্রেটারি, পরিকল্পনা উন্নয়ন চেয়ারম্যান, পিএডিসির চেয়ারম্যান, অর্থ দপ্তরের সেক্রেটারি, কৃষি দপ্তরের সেক্রেটারি ও রিলিফ কমিশনার ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, দুর্গত লোকজনকে শিগগিরই আত্মনির্ভরশীল করে তোলার উদ্দেশ্যে টেস্ট রিলিফ ব্যবস্থা জোরদার করা হবে। দুর্গত এলাকার কৃষকদের কৃষিঋণ ও বীজ প্রদান এবং চাষকাজে ট্রাক্টর সরবরাহ করার জন্যও ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ঢাকায় নিখিল পাকিস্তান সংবাদপত্র সমিতির আঞ্চলিক কমিটির জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে খুলনা নিউজপ্রিন্ট মিলস কর্তৃপক্ষ একতরফা নিউজপ্রিন্টের মূল্যবৃদ্ধি করায় দুঃখ প্রকাশ করা হয়। প্রতিটনে ৩৫ টাকা করে নিউজপ্রিন্টের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রতিটন এক হাজার ৫৪০ টাকা বর্ধিত হারে নতুন করে লেটার অব ক্রেডিট খোলার অনুরোধ জানিয়ে খুলনা নিউজপ্রিন্ট মিলসের পাঠানো পত্র নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। বৈঠকে ১৯৭০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত নিখিল পাকিস্তান সংবাদপত্র সমিতির কার্যকরী কমিটির জরুরি সভার এক প্রস্তাব এবং পরবর্তী সময়ে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নরের সঙ্গে সংবাদপত্র শিল্পের প্রতিনিধিদের আলোচনার কথা স্মরণ করা হয়।
সূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।

Wednesday, July 19, 2017

১ জানুয়ারী ১৯৭১ বাংলাদেশ

০১ জানুয়ারি, ১৯৭১ পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভুট্টো করাচিতে জানান, তিনি তাঁর প্রস্তাবিত ঢাকা সফর সাময়িকভাবে করে দিয়েছেন । পাকিস্তান আওয়ামী লীগ প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাতের উদ্দেশে ৩ জানুয়ারি তাঁর ঢাকা করার কথা ছিল । ক্লিফটনস্থ স্বীয় বাসভবনে অনুষ্ঠিত এক ঘরোয়া বৈঠকে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ১৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য পশ্চিম পাকিস্তানে জাতীয় পরিষদের ছয়টি নির্বাচনী এলাকায় তাঁকে সময় দিতে হচ্ছে বলে ওই সফর পরিকল্পনা সাময়িক বাতিল করা অপরিহার্য হয়ে পড়েছে । তিনি তার পরিবর্তে পাঞ্জাব পিপলস পার্টির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা খারকে শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য ঢাকায় পাঠাতে চেয়েছেন । বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কাশ্মীর সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে কাশ্মীরীদের পূর্ণ সমর্থনদানের আশ্বাস দেন । খাজা সানাউল্লাহ শামিমের নেতৃত্বে কাশ্মীর মুসলিম সম্মেলনের পাঁচজন নেতা আজ বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি তাঁদের উপরোক্ত আশ্বাস দেন । কাশ্মীরি নেতারা সাম্প্রতিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ঐতিহাসিক বিজয়ের জন্য আজাদ কাশ্মীরের প্রেসিডেন্ট সরদার আবদুল কাইয়ুমের একটি অভিনন্দনবাণী বঙ্গবন্ধুর কাছে পৌঁছে দেন। সূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর BlacknBlind©

Tuesday, August 14, 2012

১৫ ই অগাস্ট ১৯৭৫ শুক্রবার

আচমকা ঘুম ভেঙ্গে গেল তোমার। বাহিরে গোলা গুলি হচ্ছে ....... কিন্তু কেন?দেশ তো এখন স্বাধীন।এখন সবার একসাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশ এর জন্য কাজ করার কথা। আবার গোলা গুলির শব্দ আসছে। এবার আগের থেকে আরও জোরালো, মনে হচ্ছে বাড়ির ভেতর থেকে আসছে।তুমি বিছানা থেকে নামলে ধীর পায়ে বেরিয়ে আসলে দোতালার বারান্দাতে।গোলা গুলির শব্দ একটু কমলো মনে হচ্ছে তবে থেমে যাইনি এখন।কি হচ্ছে সেটা পরিষ্কা র বুঝা যাচ্ছে না।খাঁচায় বন্দী বাঘ এর মতো তুমি দোতালার বারান্দা আর বেলকনীতে পায়চারি করছো । টেলিফোন এর রিসিভার টা তুলে গণভবন এর নাম্বার এ ফোন করলে .... কিন্তু লাইন পাওয়া যাচ্ছে না।৩/৪ বার চেষ্টা করে অবশেষে লাইন পাওয়া গেল।কর্নেল জামিল কে বললে জামিল আমি বিপদে পরেছি,কে বা কারা হামলা করেছে জানি না তুমি দ্রুত আমার এখানে আস। এবার গোলা গুলির শব্দ টা নিচ তলা থেকে আসছে মনে হচ্ছে।তুমি আবার ছুটে আসলে দোতালার বারান্দা তে, নিচে তাকিয়ে দেখলে .... দুইজন অস্ত্রধারী সৈনিক তোমার দিকেই তাকিয়ে আছে।তুমি হুঙ্কার দিয়ে উঠলে অ্যাই তোরা কি চাস ?তোমার হুঙ্কার শুনে চমকে উঠলো দুইজন।তুমি এগিয়ে গেলে নীচতলায় নামার সিঁড়ীর দিকে।তখনো দুইজন তোমার প্রশ্নের কোন উত্তর দেয়নি ।তবে নিঃশব্দে কখন যেন এসে দাঁড়িয়েছে ঠিক সিঁড়ির গোঁড়া তে । ফজর এর আযান হচ্ছে .. সেই দুইজন সৈনিক এখনো তোমার প্রশ্নের কোন উত্তর দেয়নি ।আযান এর এই সুমধুর সুরটা আজ কেন যেন অন্যরকম লাগছে ।জামীল এর এখনো দেখা নেই ...... তুমি আবার জীগেষ্ণ করলে অ্যাই তোরা কি চাস ? এবার ও কোনও উত্তর পাওয়া গেল না ......... তবে এবার তোমার প্রশ্ন শুনে একজন অপর জন এর দিকে তাকাতে অন্যজন উপর নিচ মাথা নরিয়ে কী যেন ঈশারা করলো । তুমি তখন ঠিক সিঁড়ির মাঝ বরাবর নিচে তাকিয়ে দেখলে বীভৎস কালো ম্যাসিন গান এর নল টা তোমার বুক বরাবর ..... তীক্ষ্ণ তীব্র একটা জ্বালা তে তোমার পুরো শরীর কেঁপে উঠলো .... পরনের সাদা পাঞ্জাবী টা লাল হয়ে যাচ্ছে ... তুমি অবিশ্বাস ভরা দৃষ্টি দিয়ে ক্ষণিক এর জন্য তোমার দুই হত্যাকারী সৈনিক কে দেখলে তারপর ঢলে পড়লে সিঁড়ীর উপর ..... তীব্র ব্যা থা য় নীল হয়ে গেছে তোমার পুরো শরীর ..... সিঁড়ির প্রতিটি ধাপ পেরিয়ে ফিনকী দিয়ে ছুটে যাচ্ছে তোমার ঘন লাল রক্ত ।এখনো আযান এর সুর শোনা যাচ্ছে .... তারপর জমাট বাঁধা অন্ধকার । দূর থেকে তোমার নিথর শরীরটার দিকে তখনো ভয় ভরা চোখ এ তাকিয়ে আছে অস্ত্রধারী দুই সৈনিক, যেন ভয় করছে তুমি আবার হুঙ্কার দিয়ে উঠবে ....প্রথমে তোমার হুঙ্কার শুনে সেদিন কেপে উঠেছিল ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর এর পুরো বাড়ী। তোমার সেই হুঙ্কার শুনে কেপে উঠেছিল তোমাকে হত্যা করতে আসা সৈনিক এর হৃদয়।তারা জানত তুমি মৃত্যু কে ভয় করনা।তুমি ভয় করনা রক্তের ঘন লাল রং কে।বরং তুমি ভয়ংকর ভালোবাসো এই ঘন লাল রং এর সাথে মিশ্রিত সবুজ রং এর একটি পতাকা কে।১৯৭১ এর ৭ই মার্চ এ ওরা তোমার সেই রক্ত পাগল করা ভাষণ শুনেছিল।ওরা জানত তুমি কথা বলা শুরু করলে আর সবাই নীরব থাকত।তাই ওরা তোমাকে আর অবকাশ দেয়নি কোনও কথা বলার। তবে ওদের সৌভাগ্য যে আমরা বর্তমান প্রজন্ম তখন নেহাতই শিশু ছিলাম।ঠিক রাসেল এর মত নিষ্পাপ।রাজনীতির ঘোরপ্যাঁচ,রক্তের ঘন লাল রং,দেশ,পতাকা সর্বোপরি মানচিত্র এসব কিছু রাসেল এর মতো আমরাও বুঝতাম না।যদি বুঝতাম তাহলে আজ ইতিহাস লিখা হতো ভিন্ন ভাবে।ওদের সৌভাগ্য কিন্তু আমাদের চরম দুর্ভাগ্য।আমি নিশ্চিত তোমাকে হত্যা করতে আসা প্রতিটি সৈনিক জানত তুমি একটি ভয়ংকর সাহসী মানুষ।এতটাই সাহসী যে পাকিস্তানী বর বর জাঁদরেল আর্মি অফিসার ও তোমার সামনে কথার খেই হারিয়ে ফেলত। আবার তুমি এতটাই আবেগি ছিলে যে পাকিস্তানী কারাগার হতে মুক্ত হোয়ে দেশ এর খবর জানার পর কান্নায় দু চোখ ভাসিয়ে দিয়েছ।১৯৭২ এ তুমি যখন দেশ এ ফের তারও ৪ বসর পর আমি জন্ম গ্রহন করেছি,কিন্তু আজ এই ২০১২ সন এ এসেও যখন তোমার ৭ই মার্চ এর সেই বজ্র কণ্ঠ স্বর শুনি বিশ্বাস কর আমার শরীর এর প্রতিটি রক্ত কনা টগবগ করে ফুট তে শুরু করে।শরীর যেন আপনা থেকেই বিদ্রোহী হয়ে যুদ্ধে যেতে চায়। বঙ্গবন্ধু আজ তোমার মতো একজন মানুষ আমাদের ভীষণ দরকার ।আমরা নেতৃত্ব বিহীন একটি জাতি আজ তোমার মৃত্যুর ৩৭ বসর পরও প্রতিটি মুহূর্ত প্রতিটি ক্ষণ এ তোমার মত আর একজন শেখ মূজীব কে পাগল এর মতো খুঁজে ফিরছি ......

Monday, August 13, 2012

বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ

প্রথমে তোমার হুঙ্কার শুনে সেদিন কেপে উঠেছিল ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর এর পুরো বাড়ীট। তোমার সেই হুঙ্কার শুনে কেপে উঠেছিল তোমাকে হত্যা করতে আসা সৈনিক এর হৃদয়।তারা জানত তুমি মৃত্যু কে ভয় করনা।তুমি ভয় করনা রক্তের ঘন লাল রং কে। বরং তুমি ভয়ংকর ভালোবাসো এই ঘন লাল রং এর সাথে মিশ্রিত সবুজ রং এর একটি পতাকা কে। ১৯৭১ এর ৭ই মার্চ এ ওরা তোমার সেই রক্ত পাগল করা ভাষণ শুনেছিল।ওরা জানত তুমি কথা বলা শুরু করলে আর সবাই নীরব থাকত। তাই ওরা তোমাকে আর অবকাশ দেয়নি কোনও কথা বলার। তবে ওদের সৌভাগ্য যে আমরা বর্তমান প্রজন্ম তখন নেহাতই শিশু ছিলাম। ঠিক রাসেল এর মত নিষ্পাপ।রাজনীতির ঘোরপ্যাঁচ,রক্তের ঘন লাল রং,দেশ পতাকা সর্বোপরি মানচিত্র এসব কিছু রাসেল এর মতো আমরাও বুঝতাম না। যদি বুঝতাম তাহলে আজ ইতিহাস লিখা হতো ভিন্ন ভাবে। ওদের সৌভাগ্য কিন্তু আমাদের চরম দুর্ভাগ্য। আজ তোমার মতো একজন মানুষ আমাদের ভীষণ দরকার । আমরা নেতৃত্ব বিহীন একটি জাতি আজ তোমার মৃত্যুর ৩৭ বসর পরও প্রতিটি মুহূর্ত প্রতিটি ক্ষণ এ তোমার মত আর একজন শেখ মূজীব কে পাগল এর মতও খুঁজে ফিরছি | আমি নিশ্চিত তোমাকে হত্যা করতে আসা প্রতিটি সৈনিক জানত তুমি একটি ভয়ংকর সাহসী মানুষ। এতটাই সাহসী যে পাকিস্তানী বর বর জাঁদরেল আর্মি অফিসার ও তোমার সামনে কথার খেই হারিয়ে ফেলত।আবার তুমি এতটাই আবেগি ছিলে যে পাকিস্তানী কারাগার হতে মুক্ত হোয়ে দেশ এর খবর জানার পর কান্নায় দু চোখ ভাসিয়ে দিয়েছ।১৯৭২ এ তুমি যখন দেশ এ ফের তারও ৪ বসর পর আমি জন্ম গ্রহন করেছি,কিন্তু আজ এই ২০১২ সন এ এসেও যখন তোমার ৭ই মার্চ এর সেই বজ্র কণ্ঠ স্বর শুনি বিশ্বাস কর আমার শরীর এর প্রতিটি রক্ত কনা টগবগ করে ফুট তে শুরু করে। শরীর যেন আপনা থেকেই বিদ্রোহী হয়ে যুদ্ধে যেতে চায়।